বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে স্ট্রোক এখন একটি বড় স্বাস্থ্য সমস্যা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়, যার মধ্যে প্রায় ৫০ লাখের বেশি মানুষ মারা যায়। বাংলাদেশেও
প্রতিবছর নতুন করে কয়েক লাখ মানুষ স্ট্রোকে আক্রান্ত হয় এবং প্রায় ১২–১৫% রোগী প্রথম মাসেই মৃত্যুবরণ করে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঝুঁকি বাড়লেও, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, ধূমপান ও অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার কারণে তরুণরাও এখন এই রোগে
আক্রান্ত হচ্ছে।
তাই আগে থেকেই জানা জরুরি— স্ট্রোক কি, কেন হয়, কীভাবে বুঝবেন এবং প্রতিরোধ করবেন। গবেষণা বলছে, স্ট্রোকজনিত মৃত্যুর সংখ্যা হার্ট অ্যাটাকের পরেই সবচেয়ে বেশি। সঠিক সময়ে চিকিৎসা না পেলে অনেক রোগী স্থায়ীভাবে পঙ্গুত্ব নিয়ে
বেঁচে থাকতে বাধ্য হয়। তবে আশার বিষয় হলো— নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, ব্যায়াম এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস মেনে চললে স্ট্রোক প্রতিরোধ করা সম্ভব।
ডা. মোহাম্মদ শামসুল ইসলাম খান বাংলাদেশের একজন অত্যন্ত দক্ষ এবং অভিজ্ঞ নিউরো সার্জন, যিনি ব্রেন, স্পাইন, নার্ভ এবং স্ট্রোক সংক্রান্ত চিকিৎসায় বিশেষজ্ঞ। বর্তমানে তিনি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল-এ অ্যাসোসিয়েট
প্রফেসর ও ইউনিট প্রধান হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
যখন হঠাৎ মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায় বা রক্তক্ষরণ হয়, তখন তাকে বলা হয় স্ট্রোক বা ব্রেন স্ট্রোক। এটি খুবই বিপজ্জনক একটি অবস্থা, কারণ কয়েক মিনিটের মধ্যেই মস্তিষ্কের কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে শুরু করে। সহজভাবে বললে, স্ট্রোক
মানে হলো মস্তিষ্কে রক্ত ঠিকমতো পৌঁছাতে না পারা। রক্ত ছাড়া মস্তিষ্ক অক্সিজেন পায় না, ফলে স্নায়ুকোষ মারা যেতে থাকে। তখন শরীরের বিভিন্ন অংশ হঠাৎ কাজ করা বন্ধ করে দিতে পারে। যেমন—হাত-পা অবশ হয়ে যাওয়া, কথা আটকে যাওয়া বা চোখে ঝাপসা দেখা।
তাই কেউ যদি প্রশ্ন করে “স্ট্রোক কি?” তাহলে বলা যায়—এটি হলো মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ বন্ধ হওয়া বা রক্তক্ষরণ হওয়ার কারণে ঘটে যাওয়া একটি মেডিকেল জরুরি অবস্থা।
স্ট্রোক কত প্রকার?
স্ট্রোক এক রকম নয়। মস্তিষ্কে কীভাবে রক্তপ্রবাহে সমস্যা হয় তার ওপর ভিত্তি করে ডাক্তাররা স্ট্রোককে মূলত তিন ভাগে ভাগ করেছেন। প্রতিটি ধরণের স্ট্রোকের কারণ ও চিকিৎসা আলাদা। তাই “স্ট্রোক কত প্রকার” জানা খুবই জরুরি, কারণ দ্রুত সঠিক ধরন চিহ্নিত
করা গেলে চিকিৎসাও তত দ্রুত শুরু করা যায়।
ইস্কেমিক স্ট্রোক (Ischemic Stroke): মস্তিষ্কের রক্তনালীতে জমাট বাঁধা রক্ত (ক্লট) আটকে গেলে এই স্ট্রোক হয়। এটি সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।
হেমোরেজিক স্ট্রোক (Hemorrhagic Stroke): রক্তনালী ফেটে গেলে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়। এতে মস্তিষ্কে চাপ বেড়ে যায় এবং গুরুতর অবস্থা তৈরি হয়।
মিনি স্ট্রোক বা TIA: একে অনেকে “স্ট্রোকের পূর্ব লক্ষণ” বলেন। এটি কয়েক মিনিট বা কয়েক ঘণ্টার জন্য দেখা দেয় এবং পরে সেরে যায়। তবে এটি বড় স্ট্রোক হওয়ার সতর্ক সংকেত।
স্ট্রোকের লক্ষণ: ব্রেন স্ট্রোক হলে কি হয়?
ব্রেন স্ট্রোক হলে হঠাৎ মস্তিষ্কের রক্তপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যায় বা রক্তনালী ফেটে রক্তক্ষরণ হয়। এতে মস্তিষ্ক পর্যাপ্ত অক্সিজেন ও পুষ্টি পায় না। কয়েক মিনিটের মধ্যেই মস্তিষ্কের কোষ নষ্ট হতে শুরু করে। ফলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ হঠাৎ কাজ করা বন্ধ
করে দিতে পারে। এই কারণে ব্রেন স্ট্রোককে জরুরি চিকিৎসার বিষয় ধরা হয়। সময়মতো চিকিৎসা না পেলে এটি স্থায়ী অক্ষমতা এমনকি মৃত্যুর কারণও হতে পারে।
মুখের একপাশ হঠাৎ বেঁকে যাওয়া বা ঝুলে পড়া
এক হাত বা পায়ে দুর্বলতা বা অবশ হয়ে যাওয়া
হঠাৎ জড়তা বা কথা জড়ানো, স্পষ্ট করে কথা বলতে না পারা
চোখে হঠাৎ ঝাপসা দেখা বা দৃষ্টি কমে যাওয়া
হাঁটতে কষ্ট হওয়া, ভারসাম্য হারানো বা মাথা ঘোরা
হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে যাওয়া বা বমি হওয়া
বিঃদ্রঃ স্ট্রোক হলে হঠাৎ শরীরে কিছু পরিবর্তন হয়, যা একেবারেই অবহেলা করা উচিত নয়। মনে রাখবেন—সময়ই এখানে সবচেয়ে বড় বিষয়।
মিনি স্ট্রোকের লক্ষণ
মিনি স্ট্রোক বা TIA (Transient Ischemic Attack) অনেক সময় বড় স্ট্রোকের আগাম সতর্ক সংকেত হিসেবে দেখা দেয়। মিনি স্ট্রোকের লক্ষণ বা স্ট্রোকের পূর্ব লক্ষণ হলো সাধারণত কয়েক মিনিট থেকে কয়েক ঘণ্টা স্থায়ী হয় এবং পরে সেরে যায়।
এগুলো কখনোই হালকা করে দেখা উচিত নয়। এটিকে অবহেলা করলে পরবর্তীতে বড় স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। তাই মিনি স্ট্রোককে ছোট কোনো সমস্যা ভেবে বসে থাকা একেবারেই উচিত নয়।
মিনি স্ট্রোকের সাধারণ লক্ষণগুলো হলো:
হঠাৎ শরীরের একপাশে হাত বা পা দুর্বল হয়ে যাওয়া
মুখের একপাশ বেঁকে যাওয়া বা অবশ হয়ে যাওয়া
কথা জড়ানো বা স্পষ্টভাবে বলতে না পারা
চোখে ঝাপসা দেখা বা সাময়িকভাবে দৃষ্টি হারানো
মাথা ঘোরা, ভারসাম্য হারানো বা অচেতন হয়ে পড়া
হঠাৎ প্রচণ্ড মাথাব্যথা হওয়া
বিঃদ্রঃ মনে রাখবেন, মিনি স্ট্রোকের লক্ষণ দ্রুত চলে গেলেও এটি বড় স্ট্রোকের পূর্ব লক্ষণ হতে পারে। তাই এমন কিছু ঘটলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া জরুরি।
স্ট্রোক কেন হয়?
অনেকে ভাবে “ব্রেন স্ট্রোক কেন হয়?” এর আসল কারণ হলো মস্তিষ্কের রক্তনালীর সমস্যা। তবে কিছু ঝুঁকি আছে যেগুলো স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বাড়িয়ে দেয়। এগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখলে স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।
দীর্ঘদিনের উচ্চ রক্তচাপ
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকা
রক্তে চর্বি ও কোলেস্টেরল বেশি হওয়া
ধূমপান ও অ্যালকোহল সেবন
অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা
কম শারীরিক পরিশ্রম
হার্টের অসুখ যেমন অ্যাট্রিয়াল ফিব্রিলেশন
পারিবারিক ইতিহাসে স্ট্রোক থাকা
ব্রেন স্ট্রোক হলে কি করনীয়?
ব্রেন স্ট্রোক হলে এক মুহূর্ত দেরিও করা যাবে না। যত দ্রুত রোগীকে চিকিৎসকের কাছে নেওয়া হবে, ততই মস্তিষ্কের ক্ষতি কমানো সম্ভব। অনেকেই প্রথমে ভয় পেয়ে যান বা বাড়িতে কিছু করার চেষ্টা করেন, যা বড় ভুল। মনে রাখতে হবে, স্ট্রোক একটি মেডিকেল ইমার্জেন্সি—সময়ই
এখানে সবচেয়ে বড় বিষয়।
সাথে সাথে নিকটস্থ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান
রোগীকে কিছু খেতে বা পান করতে দেবেন না
রোগীকে যতটা সম্ভব শান্ত রাখুন এবং শোওয়া অবস্থায় রাখুন।
মুখ বা হাত-পা পরীক্ষা করুন—কোনো দুর্বলতা আছে কিনা
কথা বলার ক্ষমতা লক্ষ্য করুন
জরুরি অ্যাম্বুলেন্স ডাকতে দেরি করবেন না
পরিবারের অন্যদেরও দ্রুত জানিয়ে দিন যাতে রক্ত বা জরুরি চিকিৎসার প্রস্তুতি নেওয়া যায়।
মনে রাখবেন—স্ট্রোকের ক্ষেত্রে দেরি মানেই স্থায়ী অক্ষমতা বা মৃত্যু।
ব্রেইন স্ট্রোকের চিকিৎসা
ব্রেইন স্ট্রোকের চিকিৎসা নির্ভর করে এটি কোন ধরনের স্ট্রোক হয়েছে তার ওপর। তাই হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার প্রথমেই পরীক্ষা করে দেখবেন রক্ত জমাট বেঁধে স্ট্রোক হয়েছে নাকি রক্তনালী ফেটে রক্তক্ষরণ হয়েছে। সঠিক কারণ জানা ছাড়া চিকিৎসা শুরু
করা যায় না। সময়মতো চিকিৎসা না পেলে স্থায়ী পক্ষাঘাত বা মৃত্যুর ঝুঁকি থাকে।
স্ট্রোকের প্রাথমিক চিকিৎসায় যা করবেন
স্ট্রোক হঠাৎ করেই হয় এবং তখন দ্রুত সঠিক ব্যবস্থা নেওয়া সবচেয়ে জরুরি। অনেকে আতঙ্কে পড়ে যান, কিন্তু কী করতে হবে তা না জানলে রোগীর অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে। মনে রাখবেন, প্রাথমিক চিকিৎসার লক্ষ্য হলো রোগীকে নিরাপদ রাখা এবং যত দ্রুত সম্ভব
হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়া।
“FAST” নিয়ম মনে রাখুন
F (Face): মুখ বেঁকে গেছে কি না খেয়াল করুন।
A (Arms): দুই হাত তুলতে পারছে কি না পরীক্ষা করুন।
S (Speech): কথা জড়াচ্ছে কি না দেখুন।
T (Time): সময় নষ্ট না করে সাথে সাথে হাসপাতালে নিয়ে যান।
রোগীকে আরামদায়ক অবস্থায় শুইয়ে দিন, যাতে শ্বাস নিতে সুবিধা হয়।
রোগীকে কিছু খেতে বা পান করতে দেবেন না, কারণ গিলতে সমস্যা হতে পারে।
মাথা সামান্য উঁচু করে রাখুন, যাতে মস্তিষ্কে চাপ কিছুটা কমে।
রোগীকে একা ফেলে রাখবেন না; তার অবস্থা খেয়াল করুন এবং কোনো পরিবর্তন হলে নোট করুন।
যত দ্রুত সম্ভব জরুরি অ্যাম্বুলেন্স ডাকুন বা সরাসরি হাসপাতালে নিয়ে যান।
1ইস্কেমিক স্ট্রোকের চিকিৎসা
যখন মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বেঁধে রক্তপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়, তখন এটিকে ইস্কেমিক স্ট্রোক বলা হয়। এর চিকিৎসায়—
থ্রম্বোলাইটিক ওষুধ (Clot-busting drug): নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে (৪.৫ ঘণ্টার মধ্যে) দিলে জমাট রক্ত গলানো সম্ভব হয়।
মেকানিক্যাল থ্রম্বেক্টমি: বড় রক্ত জমাট হলে বিশেষ যন্ত্র দিয়ে সেটি সরানো হয়।
2হেমোরেজিক স্ট্রোকের চিকিৎসা
যখন রক্তনালী ফেটে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়, তখন এটিকে হেমোরেজিক স্ট্রোক বলা হয়। এর চিকিৎসায়—
ওষুধের মাধ্যমে রক্তক্ষরণ নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
কখনো কখনো অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে মস্তিষ্কের রক্ত জমাট বা চাপ কমানো হয়।
3মিনি স্ট্রোক (TIA) এর চিকিৎসা
মিনি স্ট্রোক সাময়িকভাবে হয়, কিন্তু ভবিষ্যতে বড় স্ট্রোক হওয়ার ইঙ্গিত দেয়। তাই ডাক্তার সাধারণত—
রক্ত পাতলা করার ওষুধ দেন (যেমন অ্যাসপিরিন, ক্লোপিডোগ্রেল)।
ডায়াবেটিস, রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখার ব্যবস্থা নেন।
4পুনর্বাসন (Rehabilitation)
স্ট্রোকের পর অনেক সময় রোগীর হাঁটা, কথা বলা বা হাত-পা নড়ানোর ক্ষমতা কমে যায়। এ সময় এসব থেরাপি নিয়মিত চালিয়ে গেলে ধীরে ধীরে সুস্থ হওয়া সম্ভব হয়।
ফিজিওথেরাপি
স্পিচ থেরাপি
অকুপেশনাল থেরাপি
ব্রেন স্ট্রোকে সার্জারি কখন করা লাগে?
সব ধরনের ব্রেন স্ট্রোকের চিকিৎসায় সার্জারি লাগে না। অনেক ক্ষেত্রে শুধু ওষুধেই রোগী সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন। তবে কিছু জটিল পরিস্থিতি আছে যেখানে অপারেশন বা সার্জারি ছাড়া উপায় থাকে না। সার্জারির মাধ্যমে মস্তিষ্কে চাপ কমানো, রক্ত জমাট সরানো
বা রক্তক্ষরণ বন্ধ করা হয়।
কোন কোন ক্ষেত্রে ব্রেন স্ট্রোকে সার্জারি দরকার হতে পারে:
হেমোরেজিক স্ট্রোক: যখন মস্তিষ্কের ভেতরে রক্তনালী ফেটে যায় এবং প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। এতে মস্তিষ্ক ফুলে যায়, তখন সার্জারি করে রক্ত পরিষ্কার করতে হয়।
বড় রক্ত জমাট (Clot): ইস্কেমিক স্ট্রোকে যদি বড় রক্ত জমাট মস্তিষ্কের প্রধান রক্তনালী বন্ধ করে দেয়, তখন বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যে সার্জারির মাধ্যমে সেটি সরানো হয়।
মস্তিষ্কে অতিরিক্ত চাপ (Raised ICP): রক্তক্ষরণ বা ফোলাভাবের কারণে মস্তিষ্কে চাপ বেড়ে গেলে জীবন রক্ষার জন্য খুলির একটি অংশ কেটে চাপ কমানো হয় (Decompressive Craniectomy)।
বারবার স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি থাকলে: রক্তনালীর বিশেষ সমস্যায় প্রতিরোধমূলক সার্জারি করতে হতে পারে।
ডা. মোহাম্মদ শামসুল ইসলাম খান: বাংলাদেশে অন্যতম সেরা স্ট্রোক সার্জন
ডা. মোহাম্মদ শামসুল ইসলাম খান বাংলাদেশের একজন অত্যন্ত দক্ষ এবং অভিজ্ঞ নিউরো সার্জন, যিনি ব্রেন, স্পাইন, নার্ভ এবং স্ট্রোক সংক্রান্ত চিকিৎসায় বিশেষজ্ঞ। তিনি বর্তমানে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল‑এ বিজ্ঞান অনুষদের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ও ইউনিট প্রধান হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। যদি আপনার পরিবারের কারও স্ট্রোকের লক্ষণ দেখা দেয় বা ব্রেন স্ট্রোক হলে করনীয় বিষয়ে আপনি দুশ্চিন্তায় থাকেন, তাহলে দেরি না করে অভিজ্ঞ নিউরো সার্জনের কাছে চিকিৎসা নিন। আপনার বা প্রিয়জনের ব্রেন স্ট্রোকের চিকিৎসা দেরি করবেন না।
স্ট্রোক এমন একটি রোগ, যা হঠাৎ করেই জীবনকে পাল্টে দিতে পারে। তবে সচেতন হলে এবং সময়মতো চিকিৎসা নিলে জীবন বাঁচানো যায়। তাই স্ট্রোকের লক্ষণ সম্পর্কে সবাইকে জানাতে হবে, যেন রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া যায়। আর ঝুঁকি কমাতে চাইলে জীবনযাত্রায়
পরিবর্তন আনতে হবে—এটাই হলো সবচেয়ে কার্যকর প্রতিরোধ।
স্ট্রোকের চিকিৎসা সম্পর্কে প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলি
স্ট্রোক কেন হয়?
স্ট্রোকের প্রধান কারণ হলো উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল, ধূমপান, স্থূলতা ও হৃদরোগ। এসব নিয়ন্ত্রণে রাখলে স্ট্রোক প্রতিরোধ করা যায়।
স্ট্রোক করলে প্রাথমিক চিকিৎসা কী?
স্ট্রোক হলে প্রথম কাজ হলো রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া। রোগীকে শুইয়ে দিন, কিন্তু কিছু খেতে বা পান করতে দেবেন না। মুখ, হাত ও কথাবলার সমস্যা দেখে রাখুন (FAST নিয়ম)।
হেমোরেজিক স্ট্রোক থেকে সেরে উঠতে কতদিন সময় লাগে?
হেমোরেজিক স্ট্রোকে সেরে উঠতে সময় রোগীর অবস্থা অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে। দ্রুত চিকিৎসা শুরু করলে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
ব্রেন স্ট্রোক রোগীর থেরাপি কী?
ব্রেন স্ট্রোকের পরে ফিজিওথেরাপি, স্পিচ থেরাপি এবং অকুপেশনাল থেরাপি নিয়মিত করলে ধীরে ধীরে রোগী স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারে।
মিনি স্ট্রোক হলে কী করণীয়?
মিনি স্ট্রোকের লক্ষণ দ্রুত চলে গেলেও একে হালকা করে দেখা উচিত নয়। সাথে সাথে নিউরো সার্জন বা স্ট্রোক বিশেষজ্ঞের কাছে যেতে হবে।