মিনি স্ট্রোক বা TIA (Transient Ischemic Attack) একটি মারাত্মক সতর্কবার্তা যা প্রকৃত স্ট্রোকের আগে দেখা দেয়।
এর লক্ষণগুলোর মধ্যে থাকে হঠাৎ করে কথা জড়িয়ে যাওয়া, শরীরের একপাশ অবশ হয়ে যাওয়া, দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা দেখা
বা সাময়িকভাবে হারিয়ে যাওয়া, এবং ভারসাম্য হারানো। অনেকেই এসব লক্ষণকে ছোট সমস্যা ভেবে অবহেলা করেন, কিন্তু
এটি ভবিষ্যতে বড় ঝুঁকির ইঙ্গিত দিতে পারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এবং World Stroke Organization (WSO)–এর সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর
বিশ্বজুড়ে গড়ে ১১.৯৫ মিলিয়ন নতুন স্ট্রোক রেকর্ড করা হয়। অর্থাৎ, প্রতি চারজনের মধ্যে একজন ব্যক্তি
জীবদ্দশায় অন্তত একবার স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। তারা বলছে TIA বা স্ট্রোক উভয়ের পর দ্রুত পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও
রিস্ক ফ্যাক্টর নিয়ন্ত্রণ করা গেলে পরবর্তীতে বড় স্ট্রোকের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব।
যদি উপরের উপসর্গ অনুভব করেন, তাহলে দেরি না করে
বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞ নিউরোসার্জন ডাঃ মুহম্মদ শামসুল ইসলাম খান এর পরামর্শ নিন।
বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এবং ইউনিট প্রধান হিসেবে
কর্মরত। তিনি ব্রেইন, স্পাইন,
স্ট্রোক ও নার্ভ রোগের অভিজ্ঞ চিকিৎসক।
মিনি স্ট্রোক হলো মস্তিষ্কের কোনো অংশে সাময়িক রক্ত প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়া। এর ফলে মস্তিষ্কের কিছু
অংশে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেয়, কিন্তু স্থায়ী ক্ষতি হয় না। এটি সাধারণত কয়েক মিনিট থেকে কয়েক ঘণ্টা
স্থায়ী হয়। সাধারণত এটি বড় স্ট্রোকের আগাম সতর্কবার্তা হিসেবে ধরা হয়।
গবেষণায় দেখা গেছে, মিনি স্ট্রোক বা TIA বড় স্ট্রোকের আগাম সংকেত হিসেবে কাজ করে এবং প্রায়
১৫% ইসকেমিক স্ট্রোকের আগে TIA দেখা দেয়। তাই মিনি স্ট্রোককে কখনোই অবহেলা করা উচিত নয়।
২০২১ সালের গ্লোবাল রিপোর্ট অনুযায়ী —
বিশ্বজুড়ে প্রায় ১১.৯ মিলিয়ন নতুন স্ট্রোকের ঘটনা ঘটে।
বর্তমানে প্রায় ৯৩.৮ মিলিয়ন মানুষ স্ট্রোক থেকে বেঁচে আছেন (স্ট্রোক সারভাইভার)।
বছরে প্রায় ৭.৩ মিলিয়ন মানুষ স্ট্রোকজনিত কারণে মারা যান।
নোট: মিনি স্ট্রোকের পর ৩ মাসের মধ্যে ১৫–২০% মানুষের বড় স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
মিনি স্ট্রোক এর ৬টি প্রধান লক্ষণ
মিনি স্ট্রোকের লক্ষণগুলো হঠাৎ করেই দেখা দিতে পারে। এটি সাধারণত কয়েক মিনিট থেকে শুরু করে কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত
স্থায়ী হয়। বেশিরভাগ সময় মানুষ বুঝতেই পারেন না যে এটি মিনি স্ট্রোক। তবে দ্রুত চিহ্নিত করা গেলে বড়
স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেক কমানো যায়।
নিচে মিনি স্ট্রোকের ছয়টি সাধারণ ও গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ উল্লেখ করা হলো, যা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া
উচিত।
১.মুখের একপাশ বেঁকে যাওয়া বা অবশ হওয়া
হঠাৎ মুখের একদিক ঝুলে পড়া
হাসতে গেলে মুখ একপাশে বাঁকা হওয়া
কথা বলার সময় মুখের অস্বাভাবিক নড়াচড়া
২.হাত বা পায়ের দুর্বলতা
হঠাৎ করে এক হাত বা পা দুর্বল লাগা
শরীরের একপাশ অবশ হয়ে যাওয়া
জিনিস হাত থেকে পড়ে যাওয়া
হাঁটতে গিয়ে ভারসাম্য হারানো
৩.কথা বলতে অসুবিধা
কথা জড়িয়ে যাওয়া বা অস্পষ্ট উচ্চারণ
সঠিক শব্দ খুঁজে না পাওয়া
অন্যের কথা বুঝতে সমস্যা হওয়া
কথা বলার ইচ্ছা থাকলেও মুখ দিয়ে শব্দ বের না হওয়া
৪.দৃষ্টি সমস্যা
হঠাৎ এক চোখে বা দুই চোখেই ঝাপসা দেখা
দ্বিগুণ দেখা (ডাবল ভিশন)
চোখের সামনে অন্ধকার হয়ে আসা
দৃষ্টিশক্তি সাময়িকভাবে হারিয়ে ফেলা
৫.তীব্র মাথাব্যথা
হঠাৎ প্রচণ্ড মাথাব্যথা শুরু হওয়া
স্বাভাবিক মাথাব্যথার চেয়ে ভিন্ন ধরনের ব্যথা
বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া
মাথা ঘোরানো বা চক্কর দেওয়া
৬.ভারসাম্যহীনতা ও মাথা ঘোরা
হঠাৎ মাথা ঘুরতে শুরু করা
হাঁটতে গিয়ে পড়ে যাওয়ার উপক্রম
দাঁড়িয়ে থাকতে অসুবিধা
চারপাশ ঘুরছে এমন অনুভূতি
মিনি স্ট্রোক এর অন্যান্য লক্ষণ
হঠাৎ বিভ্রান্তি বা কনফিউশন
স্মৃতিশক্তি সাময়িক লোপ পাওয়া
চোখের পাতা ঝুলে পড়া
গিলতে অসুবিধা হওয়া
শরীরে ঝিনঝিন অনুভূতি
অস্বাভাবিক ক্লান্তি বা দুর্বলতা
মিনি স্ট্রোক চেনার উপায় কি?
মিনি স্ট্রোক চেনার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো FAST নিয়ম, যা দ্রুত শনাক্ত করতে সাহায্য করে। মনে
রাখবেন, দ্রুত পদক্ষেপই বড় স্ট্রোক থেকে জীবন বাঁচাতে পারে।
F = Face (মুখ): মুখ কি একপাশে বেঁকে গেছে?
A = Arms (হাত): দুই হাত সমানভাবে উঁচু করতে পারছেন?
S = Speech (কথা): কথা জড়িয়ে যাচ্ছে বা অস্পষ্ট?
T = Time (সময়): এই লক্ষণ দেখলে দেরি না করে হাসপাতালে যান।
মিনি স্ট্রোক হলে করণীয় কি?
মিনি স্ট্রোক হলে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো দেরি না করা। উপসর্গগুলো সাময়িক মনে হলেও এটি বড়
স্ট্রোকের আগাম সংকেত হতে পারে। তাই দ্রুত নিকটস্থ হাসপাতালে যান বা অভিজ্ঞ
নিউরোলজিস্ট বা নিউরোসার্জন এর পরামর্শ নিন। নিজে থেকে কোনো ওষুধ খাওয়া বা অবহেলা করা
বিপজ্জনক হতে পারে।
জরুরি পদক্ষেপ:
তাৎক্ষণিক চিকিৎসা নিন: ৯৯৯ বা নিকটস্থ হাসপাতালে যোগাযোগ করুন।
লক্ষণ শুরুর সময় নোট করুন: ডাক্তারকে জানান কখন লক্ষণ শুরু হয়েছিল।
রোগীকে শুইয়ে রাখুন: মাথা সামান্য উঁচু রাখুন।
কিছু খাওয়াবেন না: গিলতে সমস্যা হতে পারে।
চিকিৎসায় দেরি করবেন না: লক্ষণ চলে গেলেও অবশ্যই ডাক্তার দেখান।
মিনি স্ট্রোক এর ঝুঁকির কারণ
মিনি স্ট্রোক সাধারণত মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহের সাময়িক বাধার কারণে ঘটে, যা বিভিন্ন শারীরিক ও জীবনযাপনজনিত কারণে
হতে পারে। উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, রক্তে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল, ধূমপান, স্থূলতা, অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস ও
ব্যায়ামের অভাব, এসবই প্রধান ঝুঁকির কারণ। এসব ঝুঁকি এড়াতে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করুন এবং নিউরোসার্জনের
পরামর্শ নিন।
নিয়ন্ত্রণযোগ্য কারণ:
উচ্চ রক্তচাপ
ডায়াবেটিস
উচ্চ কোলেস্টেরল
ধূমপান ও মদ্যপান
স্থূলতা
শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা
অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস
অনিয়ন্ত্রণযোগ্য কারণ:
বয়স (৫৫ বছরের বেশি)
পারিবারিক ইতিহাস
পূর্বের স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাক
হৃদরোগ
মিনি স্ট্রোক প্রতিরোধের উপায়
মিনি স্ট্রোক প্রতিরোধে সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো নিয়মিত স্বাস্থ্যপরীক্ষা ও সচেতন জীবনযাপন। যদি আগেও মিনি
স্ট্রোক বা স্ট্রোকের লক্ষণ দেখা দিয়ে থাকে, তাহলে নিয়মিতভাবে একজন অভিজ্ঞ নিউরোসার্জনের পরামর্শ নিন।
মিনি স্ট্রোক প্রতিরোধের মূল উপায়গুলো হলো:
রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়মিত নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
ধূমপান ও অ্যালকোহল সম্পূর্ণ পরিহার করুন।
প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটা বা হালকা ব্যায়াম করুন।
কম চর্বিযুক্ত ও পুষ্টিকর খাবার খান।
পর্যাপ্ত ঘুম ও মানসিক চাপ কমান।
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করুন।
নিয়মিত চেকআপ:
প্রতি ৬ মাসে রক্তচাপ পরীক্ষা।
বছরে একবার ডায়াবেটিস ও কোলেস্টেরল পরীক্ষা।
হৃদরোগের লক্ষণ থাকলে ECG করান।
৪০ বছর পরে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করুন।
মিনি স্ট্রোকের প্রাথমিক চিকিৎসা
মিনি স্ট্রোক হলে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করা অত্যন্ত জরুরি। উপসর্গ দেখা দিলে বসে বিশ্রাম নিন, মাথা উঁচু করে রাখুন
এবং শান্ত থাকুন। নিজের থেকে কোনো ওষুধ খাওয়া বা সময় নষ্ট করা বিপজ্জনক হতে পারে। যত দ্রুত সম্ভব নিকটস্থ
হাসপাতাল বা অভিজ্ঞ নিউরোসার্জন এর কাছে যান, কারণ প্রথম কয়েক ঘণ্টা চিকিৎসার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়।
প্রাথমিক চিকিৎসা পদ্ধতি:
ওষুধ: রক্ত জমাট বাঁধা প্রতিরোধের জন্য এন্টিপ্লেটলেট ওষুধ।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ: উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ।
কোলেস্টেরল কমানো: স্ট্যাটিন জাতীয় ওষুধ।
সার্জারি: প্রয়োজনে ক্যারোটিড আর্টারি সার্জারি।
আধুনিক চিকিৎসা সুবিধা:
বর্তমানে বাংলাদেশে স্ট্রোক চিকিৎসায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে।
ডাঃ মুহম্মদ শামসুল ইসলাম খান এবং তাঁর মতো অভিজ্ঞ নিউরোসার্জনরা স্ট্রোকের জরুরি চিকিৎসা,
সার্জারি ও পুনর্বাসন সেবা দিয়ে থাকেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ দেশের বড় বড় হাসপাতালগুলোতে এখন আধুনিক স্ট্রোক ইউনিট রয়েছে,
যেখানে দ্রুত রোগ নির্ণয়, স্ক্যান, ওষুধ প্রয়োগ এবং ফলোআপ চিকিৎসা দেওয়া হয়।
মিনি স্ট্রোক হলে কখন ডাক্তার দেখানো জরুরি?
মিনি স্ট্রোকের উপসর্গ দেখা দিলে এক মুহূর্তও দেরি করা উচিত নয়। অনেক সময় উপসর্গ কয়েক ঘণ্টার মধ্যে চলে গেলেও
সেটি বড় স্ট্রোকের আগাম সংকেত হতে পারে। তাই যেকোনো সন্দেহজনক লক্ষণ দেখা দিলেই অভিজ্ঞ
নিউরোসার্জন বা স্ট্রোক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
নিচের যেকোনো লক্ষণ দেখলে অবিলম্বে হাসপাতালে যান:
মুখ, হাত বা পায়ে হঠাৎ অবশভাব বা দুর্বলতা
কথা বলতে বা বুঝতে সমস্যা
এক বা দুই চোখে দৃষ্টি সমস্যা
হাঁটতে অসুবিধা, মাথা ঘোরা বা ভারসাম্যহীনতা
কারণ ছাড়াই তীব্র মাথাব্যথা
অজ্ঞান হয়ে যাওয়া বা খিঁচুনি
মনে রাখবেন: লক্ষণ ১০-১৫ মিনিটে চলে গেলেও এটি মিনি স্ট্রোক হতে পারে। অবশ্যই ডাক্তার দেখান।
বাংলাদেশে স্ট্রোক চিকিৎসা সুবিধা
বর্তমানে বাংলাদেশে স্ট্রোক চিকিৎসা অনেক উন্নত ও সহজলভ্য হয়েছে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহীসহ দেশের বড়
শহরগুলোতে এখন মানসম্মত স্ট্রোক চিকিৎসা কেন্দ্র ও আধুনিক স্ট্রোক ইউনিট রয়েছে। অভিজ্ঞ
নিউরোসার্জন ও স্ট্রোক বিশেষজ্ঞরা দ্রুত রোগ শনাক্ত করে সঠিক চিকিৎসা ও পুনর্বাসন সেবা দিয়ে জীবন রক্ষা
করছেন।
মিনি স্ট্রোক এর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
মিনি স্ট্রোকের যেকোনো উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। কারণ প্রাথমিক চিকিৎসা
যত তাড়াতাড়ি শুরু হবে, বড় স্ট্রোকের ঝুঁকি তত কমবে।
ডাঃ মুহম্মদ শামসুল ইসলাম খান, সহযোগী অধ্যাপক, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল,
২০ বছরেরও বেশি অভিজ্ঞ একজন স্ট্রোক ও নিউরোসার্জারি বিশেষজ্ঞ।
জীবনযাত্রা পরিবর্তন: স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তুলুন।
শেষ কথা
মিনি স্ট্রোকের পর সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়া সম্ভব, তবে নিয়মিত ফলো-আপ জরুরি:
মিনি স্ট্রোক একটি সতর্কসংকেত যা আপনার জীবন বাঁচাতে পারে। লক্ষণ চিনতে পারলে এবং দ্রুত চিকিৎসা নিলে বড়
স্ট্রোক প্রতিরোধ করা সম্ভব। FAST নিয়ম মনে রাখুন, স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করুন এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা
করান।
আপনার বা পরিবারের কারো মিনি স্ট্রোকের লক্ষণ দেখলে দেরি না করে অভিজ্ঞ নিউরোসার্জন বা স্ট্রোক বিশেষজ্ঞের
পরামর্শ নিন। সঠিক সময়ে চিকিৎসা নিলে সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা সম্ভব।
স্বাস্থ্য সতর্কতা: এই তথ্য শুধুমাত্র সচেতনতার জন্য। চিকিৎসার জন্য অবশ্যই রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের
পরামর্শ নিন।
স্ট্রোক সাধারণত হঠাৎ করেই ঘটে। মুখের এক পাশ বেঁকে যাওয়া, কথা জড়িয়ে যাওয়া, শরীরের এক পাশ অবশ হয়ে
যাওয়া, চোখে ঝাপসা দেখা বা হঠাৎ মাথা ঘোরা—এসবই স্ট্রোকের সাধারণ লক্ষণ। এমন কিছু ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে
হাসপাতালে যেতে হবে।
মিনি স্ট্রোক কত সময় স্থায়ী হয়?
সাধারণত কয়েক মিনিট থেকে ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ১ ঘণ্টার মধ্যে লক্ষণ চলে যায়।
মিনি স্ট্রোক কি বারবার হতে পারে?
হ্যাঁ, একবার হলে পুনরায় হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই চিকিৎসা ও প্রতিরোধ জরুরি।
মানুষ কেন স্ট্রোক করে?
স্ট্রোকের মূল কারণ হলো মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হওয়া বা রক্তনালির ফেটে যাওয়া। উচ্চ রক্তচাপ,
ডায়াবেটিস, ধূমপান, স্থূলতা, রক্তে অতিরিক্ত চর্বি, মানসিক চাপ এবং অনিয়মিত জীবনযাপন স্ট্রোকের ঝুঁকি
বাড়ায়।
মস্তিষ্কের ক্ষতি হলে কি কি সমস্যা দেখা দেয়?
মস্তিষ্কের ক্ষতি হলে কথা বলার সমস্যা, এক পাশ অবশ হয়ে যাওয়া, স্মৃতিশক্তি হ্রাস, চোখে কম দেখা বা আচরণ
পরিবর্তন দেখা দিতে পারে। অনেক সময় চলাফেরার ক্ষমতা পর্যন্ত হারিয়ে যেতে পারে।
কোন খাবার খেলে স্ট্রোক হয় না?
স্ট্রোক প্রতিরোধে তাজা ফল, শাকসবজি, মাছ, বাদাম ও কম লবণযুক্ত খাবার খাওয়া ভালো। তৈলাক্ত ও অতিরিক্ত
লবণযুক্ত খাবার, লাল মাংস ও ফাস্টফুড কমাতে হবে। পর্যাপ্ত পানি পান করাও গুরুত্বপূর্ণ।
মিনি স্ট্রোক হলে কী করণীয়?
উপসর্গ দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে বসে বিশ্রাম নিন এবং দ্রুত হাসপাতালে যান। নিজের থেকে কোনো ওষুধ খাওয়া বা
সময় নষ্ট করা বিপজ্জনক হতে পারে। যত তাড়াতাড়ি চিকিৎসা শুরু করা যায়, তত বেশি আরোগ্যের সম্ভাবনা থাকে।
স্ট্রোক থেকে বাঁচার উপায় কী?
নিয়মিত রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখুন। ধূমপান ও অ্যালকোহল পরিহার করুন, নিয়মিত
ব্যায়াম করুন এবং পুষ্টিকর খাবার খান। মানসিক চাপ কমানো ও পর্যাপ্ত ঘুমও স্ট্রোক প্রতিরোধে সহায়ক।
মিনি স্ট্রোক কি বিপজ্জনক?
এটি নিজে থেকে স্থায়ী ক্ষতি করে না, কিন্তু বড় স্ট্রোকের সতর্কবার্তা। তাই গুরুত্বের সাথে নিতে হবে।
ঘরে বসে মিনি স্ট্রোক চিকিৎসা করা যায়?
না, অবশ্যই হাসপাতালে গিয়ে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখাতে হবে।
আজই স্ট্রোক ও ট্রমা বিশেষজ্ঞের কাছ থেকে চিকিৎসা নিন!