কোমরে ব্যথা একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা মনে হলেও, দীর্ঘমেয়াদে নানারকম জটিলতা দেখা দিতে পারে। আর এই সমস্যা প্রায় সব বয়সের মানুষকেই কখনো না কখনো ভোগায়। কর্মব্যস্ত জীবন, দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা, শারীরিক পরিশ্রম কিংবা বয়সজনিত কারণে কোমরের
ব্যথা দেখা দিতে পারে। অনেকেই প্রথমে এটিকে হালকা ব্যথা ভেবে গুরুত্ব দেন না, কিন্তু সময়ের সাথে সাথে এই সমস্যা জটিল আকার নিতে পারে।
বাংলাদেশে অফিসপেশা, গাড়িতে দীর্ঘ সময় বসে থাকা, অথবা ভারী কাজের কারণে কোমরের ব্যথা দ্রুত বাড়ছে। শুধু তাই নয়, ডিস্ক প্রোল্যাপ্স বা নার্ভ চাপে স্থায়ী ব্যথা এবং চলাফেরায় অক্ষমতা পর্যন্ত হতে পারে। তাই কোমরের ব্যথা নিয়ে সচেতনতা, সঠিক
কারণ জানা এবং সময়মতো চিকিৎসা নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
অনেকেই কোমরের ব্যথাকে সাধারণ ক্লান্তির অংশ মনে করেন। কিন্তু এটি শুধুই অস্থায়ী সমস্যা নয়, বরং এটি হাড়, পেশি বা স্নায়ুর জটিল সমস্যার ইঙ্গিত দিতে পারে। কোমরে ব্যথা সাধারণত লোয়ার ব্যাক (lower back) অঞ্চলে অনুভূত হয়। কখনো এটি হালকা,
আবার কখনো তীব্র ব্যথা আকারে দেখা দেয়। কিছু ক্ষেত্রে ব্যথা নিতম্ব, উরু বা পায়ের নিচ পর্যন্ত ছড়িয়ে যায়।
দীর্ঘ সময় এ সমস্যা অবহেলা করলে এটি ক্রনিক লো ব্যাক পেইন এ রূপ নিতে পারে, যা চলাফেরা, কাজকর্ম ও স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় মারাত্মক প্রভাব ফেলে। এমনকি সঠিক সময়ে চিকিৎসা না নিলে ডিস্ক প্রোল্যাপ্স, নার্ভ চাপে পক্ষাঘাত বা স্থায়ী
ব্যথার ঝুঁকি তৈরি হয়। তাই কোমরের ব্যথাকে কখনো হালকা করে দেখা উচিত নয়।
কোমর ব্যথার সাধারণ কারণসমূহ
কোমরে ব্যথা হওয়ার নানা কারণ থাকতে পারে। সাধারণ জীবনযাত্রা থেকে শুরু করে গুরুতর রোগ পর্যন্ত এর উৎস হতে পারে। নিচে এর প্রধান কারণগুলো হলো:
পেশি টান (Muscle strain): হঠাৎ ভারী কিছু তোলা বা ভুল ভঙ্গিতে কাজ করলে।
আর্থ্রাইটিস: বয়স বাড়ার সাথে সাথে জোড়ার ক্ষয়জনিত সমস্যা।
অস্টিওপোরোসিস: হাড় দুর্বল হয়ে ফাটল বা ভেঙে যাওয়া।
দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা: অফিস বা গাড়িতে ঘন্টার পর ঘন্টা বসা।
আঘাত বা দুর্ঘটনা: পড়ে যাওয়া বা হঠাৎ আঘাতে মেরুদণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া।
কোমর ব্যথা নির্ণয় পদ্ধতি
সঠিক চিকিৎসার জন্য ব্যথার মূল কারণ খুঁজে বের করা জরুরি। এজন্য চিকিৎসক বিভিন্ন পরীক্ষা করে থাকেন। কোমর ব্যথা নির্নিয় করার বেশ কিছু পদ্ধতি নিচে উল্লেখ করা হচ্ছে:
শারীরিক পরীক্ষা: নড়াচড়া, স্নায়ু পরীক্ষা।
এক্স-রে (X-ray): হাড়ের গঠন দেখা।
MRI / CT scan: ডিস্ক বা স্নায়ুর চাপ নির্ণয়।
রক্ত পরীক্ষা: সংক্রমণ বা প্রদাহ আছে কিনা বুঝতে।
কোমর ব্যথার চিকিৎসা
কোমরে ব্যথার চিকিৎসা নির্ভর করে কারণ, ব্যথার মাত্রা ও রোগীর অবস্থার ওপর। বাংলাদেশে প্রচলিত বেশ কিছু চিকিৎসা সম্পর্কে নিচে ধারণা দেওয়া হলো:
ওষুধ ও ফিজিওথেরাপি: ব্যথা কমানোর জন্য।
লাইফস্টাইল পরিবর্তন: সঠিক ভঙ্গিতে বসা, ব্যায়াম করা।
ইনজেকশন থেরাপি: নার্ভ ব্লক বা ইপিডুরাল ইনজেকশন।
অস্ত্রোপচার (Surgery): ডিস্ক প্রোল্যাপ্স বা মারাত্মক নার্ভ চাপে সার্জারি প্রয়োজন।
কোমর ব্যথা দূর করতে করনীয়
কিছু সহজ নিয়ম মানলে কোমরে ব্যথা অনেকাংশে প্রতিরোধ করা সম্ভব।
নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করুন
দীর্ঘক্ষণ এক জায়গায় বসে থাকবেন না
সঠিক ভঙ্গিতে বসা ও দাঁড়ানো শিখুন
ভারী জিনিস তুলতে হাঁটু ভাঁজ করে তুলুন
ওজন নিয়ন্ত্রণ করুন
কখন ডাক্তার দেখাবেন?
অনেকেই ওষুধ খেয়ে বা বিশ্রামে ব্যথা কমে যাবে বলে অপেক্ষা করেন। কিন্তু কিছু লক্ষণ অবহেলা করলে বড় বিপদ হতে পারে। যদি নিচের লক্ষ্মণগুলো থাকে তাহলে দেরি না করে দ্রুত ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত:
পায়ের দিকে তীব্র ব্যথা বা অসাড়তা
মূত্র বা মল নিয়ন্ত্রণে সমস্যা
দুর্ঘটনার পর ব্যথা শুরু হওয়া
কয়েক সপ্তাহ পরও ব্যথা না কমা
একজন নার্ভ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন
কোমরের ব্যথা দীর্ঘদিন চলতে থাকলে সাধারণ চিকিৎসা যথেষ্ট নাও হতে পারে। এ সময় অভিজ্ঞ নার্ভ বিশেষজ্ঞেরপরামর্শ নেওয়া জরুরি।
বাংলাদেশে অভিজ্ঞ নার্ভ বিশেষজ্ঞের মধ্যে ডা. মুহম্মদ শামসুল ইসলাম খান
বিশেষভাবে পরিচিত। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে কোমরের ব্যথা, স্পাইন সমস্যা এবং ডিস্ক প্রোল্যাপ্সের আধুনিক চিকিৎসা দিয়ে আসছেন। আধুনিক সার্জারি ও আন্তর্জাতিক
অভিজ্ঞতার কারণে অনেক রোগী তার চিকিৎসায় স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন।
সাধারণত পেশি টান, দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা, ভারী জিনিস তোলা বা ভুল ভঙ্গিতে কাজ করার কারণে কোমরে ব্যথা হয়।
কোমরের ব্যথা কি নিজে থেকে সেরে যায়?
হালকা ব্যথা কয়েকদিন বিশ্রাম নিলে কমে যেতে পারে। তবে যদি ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হয় বা পায়ে ছড়িয়ে যায়, তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
কখন কোমরের ব্যথায় ডাক্তার দেখানো জরুরি?
কয়েক সপ্তাহ পরও ব্যথা না কমা, পায়ে অসাড়তা, খিঁচুনি, দুর্ঘটনার পর ব্যথা শুরু হওয়া বা মল-মূত্র নিয়ন্ত্রণে সমস্যা হলে দ্রুত নিউরো-সার্জনের পরামর্শ নিতে হবে।
কোমরের ব্যথার চিকিৎসায় কী করা হয়?
চিকিৎসা নির্ভর করে কারণের ওপর। সাধারণত ওষুধ, ফিজিওথেরাপি, ব্যায়াম, ইনজেকশন থেরাপি দেওয়া হয়। গুরুতর ক্ষেত্রে সার্জারি প্রয়োজন হতে পারে।
বাংলাদেশে কোমরের ব্যথার জন্য কাকে দেখানো উচিত?
অভিজ্ঞ নিউরো-সার্জনের কাছে চিকিৎসা নেওয়া সবচেয়ে নিরাপদ। যেমন, ডা. মোহাম্মদ শামসুল ইসলাম খান, যিনি দীর্ঘদিন ধরে কোমরের ব্যথা ও স্পাইন রোগের সফল চিকিৎসা দিয়ে আসছেন।
Get expert brain stroke treatment in Bangladesh from Dr. Shamsul Islam Khan, Associate Professor of Neurosurgery, DMCH. Advanced care for stroke recovery